#teamseas October ICC 2022 | On the news

আব্দুস সালাম,টেকনাফ:
প্রতিবছর দেশী-বিদেশী পযর্টকেরা বেড়াতে এসে ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায় সৌন্দয্য হারাতে বসেছে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন । যত্রতত্রে ফেলে যাওয়া বর্জ্যগুলো কুড়াঁলেন ৬২ জন স্বেচ্ছাসেবক। ১০ই অক্টোবর থেকে তাঁরা টানা তিনদিন প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকেল পাচঁটা পর্যন্ত সেন্টমার্টিনের প্রতিটি অলিগলি ও সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে প্লাস্টিক বোতল, প্লাস্টিকের প্যাকেট, স্থানীদের ফেলে দেওয়া পলটিনসহ নানান ধরনের ময়লা- আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়।

ভ্রমণ মৌসুম শুরুর ঠিক আগে সেন্টমার্টিনের সমুদ্র সৈকত আর লোকালয়ের যত্রতত্র পড়ে থাকা এসব প্লাস্টিক বর্জ্য পরিস্কার করলে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশের সদস্যরা। গত সোমবার (১০ অক্টোবর) থেকে টানা তিনদিন স্থানীয় সেচ্ছাসেবীদের নিয়ে সেন্টমার্টিনের প্রতিটি অলিগলি ও সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে প্লাস্টিক বোতল, প্লাস্টিকের প্যাকেটসহ নানান ধরনের অপচনশীল ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করেন তারা।

কেওক্রাডং বাংলাদেশ ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওশান কনজারভেন্সি’র বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কোকা-কোলা বাংলাদেশের সহযোগিতায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে।

ওশান কনজারভেন্সি নামের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের সমন্বয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশ এ পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায়। তিন দিনের এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে স্বেচ্ছাসেবীরা সেন্টমার্টিন থেকে অপসারণ করেন ৬৬৩৪ কেজি নানা রকম প্লাস্টিক বর্জ্য। এর মধ্যে আছে খাবারের মোড়ক, প্লাস্টিক বোতল ও পলিথিন ব্যাগ।
কেওক্রাডং এ স্বেচ্ছাসেবীরা এসব প্লাস্টিক বর্জ্য ২০৫টি বস্তায় ভর্তি করে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে নিয়ে আসে। এরপর বর্জ্যগুলো ইউনিলিভার বাংলাদেশের চট্টগ্রামের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ইপসা- এই বর্জ্যগুলো কেওক্রাডং বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বুঝে নেন। বর্জ্যগুলো সেখান থেকো ট্রাকযোগে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে। প্রথমে বর্জগুলোকে প্লাস্টিকের প্রকারভেদে আলাদা করে চট্টগ্রামে অবস্থিত রিসাইক্লারদের কাছে কাছে কাছে হস্তান্তর করে এবং এর রিসাইক্লিং নিশ্চিত করে।

প্রবলাদ্বীপ সেন্টমার্টিনে এরকম একটি পরিচ্ছন্নতা অভিযান সম্পর্কে কেওক্রাডং বাংলাদেশের সমন্বয়কারী মুনতাসির মামুন বলেন, সামুদ্রিক আর্বজনা বা মেরিন ডেবরিজ বর্তমান দুনিয়াতে বহুল আলোচিত। এরমূল কারণ হিসেবে মেরিন ডেবরি থেকে যে মাইক্রোপ্লাস্টিক/মাইক্রোফাইবার বা যে কোনধরনের প্লাস্টিকের কণা সামুদ্রিক পরিবেশ তথা যে কোন পরিবেশের সাথে যে হারে মিশে যাচ্ছে তাতে আমাদের খাদ্যে শৃঙ্খলে প্লাস্টিকের উপস্থিতি,মানবদেহে, রক্তে, মলে এমনকি মাতৃ দুধেও প্লাস্টিক পাওয়া যাচেছ। এর ভয়াবহতার পরিমাপ আমাদের এখনও পুংখানুপঙ্খ ভাবে করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ভৌগলিক কারণে ফেলে দেয়া প্লাস্টিকের অন্তিম গন্তব্য যেকোন জলাধার হয়ে থাকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই। আর সেন্ট মার্টিনের মতো ছোট দ্বীপে পড়ে থাকা প্লাস্টিক যদি মূল ভুখন্ডে নিয়ে আসা না হয় তবে এর পরিণাম শুধু এই দ্বীপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ছড়িয়ে পরবে বা পরে বঙ্গোপসাগরে। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস ছিল আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সেই পরিণামকে যতটা সম্ভব সীমিত করা।

সেন্টমার্টিনদ্বীপের ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সেন্টমাটিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার এ উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয়। সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করলে অবশ্যই সফল হওয়া সম্ভব হবে। আগামীতে সেন্টমার্টিনে এ ধরণের কর্মসূচীর আয়োজন করলে দ্বীপের পরিবেশের জন্য তা খুবই উপকার বয়ে আনবে।


সেন্টমার্টিন থেকে সরানো হলো ৬ হাজার ৬৩৪ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য


 


Leave a Reply