International Coastal Cleanup | 2021

সেন্ট মার্টিন সমুদ্রসৈকত থেকে ১৪৫০ কেজি বর্জ্য পরিষ্কার


সেন্ট মার্টিন সমুদ্রসৈকত থেকে ১ হাজার ৪৫০ কেজি অপচনশীল বর্জ্য পরিষ্কার করা হয়েছে। প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবীর অংশগ্রহণে এ কার্যক্রম পরিচালিত হয় প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপটিতে। ওশান কনজারভেন্সি নামের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক কোস্টাল ক্লিনআপের কার্যক্রম পরিচালিত হয় বিশ্বজুড়ে। সেই ধারাবাহিকতায় গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বর সেন্ট মার্টিন সমুদ্রসৈকতে ১১তম বারের মতো পরিচালিত হয় পরিচ্ছন্নতা অভিযান। এ সময় সমুদ্রসৈকত থেকে ১ হাজার ৪৫০ কেজি অপচনশীল বর্জ্য পরিষ্কার করা হয়েছে।

সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল পরিষ্কারকরণ বা কোস্টাল ক্লিনআপ কর্মসূচির আওতায় এ আয়োজন করে কোকাকোলা ও কেওক্রাডং বাংলাদেশ। ওশান কনজারভেন্সির বাংলাদেশে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে কেওক্রাডং বাংলাদেশ।

ওশান কনজারভেন্সির বাংলাদেশ অঞ্চলের সমন্বয়ক মুনতাসির মামুন বলেন, ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাক্ষ্য দেয়। এ সৌন্দর্যের টানে প্রতিবছর হাজারো পর্যটক এ দ্বীপে জড়ো হন। দ্বীপটির সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি এর সংরক্ষণ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করাও আমাদের দায়িত্ব।’

সমুদ্রসৈকত পরিচ্ছন্ন করার কাজে স্থানীয় স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবীরাও। অংশগ্রহণ করেছিলেন সৈকতে আসা পর্যটকেরাও। পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশ নিয়েছিল পরিচ্ছন্নতা অভিযানে।

মুনতাসির মামুন আরও বলেন, ‘কোস্টাল ক্লিনআপের আয়োজনে প্রতিবছরই অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, সবাই মিলে কাজ করলে শুধু সেন্ট মার্টিন নয়, পুরো পৃথিবীকেই আমরা আরও পরিষ্কার করে তুলতে পারব।’

আয়োজকদের মতে, এক দিনের পরিচ্ছন্নতায় সমুদ্রসৈকত বর্জ্যমুক্ত করা সম্ভব নয়, তবে এ উদ্যোগ স্থানীয় ও পর্যটকদের সচেতন করতে ভূমিকা রাখবে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০১১ সালে সেন্ট মার্টিন সমুদ্রসৈকত থেকে ৪৮০কেজি বর্জ্য পরিষ্কার করা হয়। বছর বছর বেড়েছে বর্জ্যের পরিমাণ। ২০২০ সালে এসে পরিষ্কারকৃত বর্জ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১ হাজার ১৪০ কেজিতে। সমুদ্রসৈকতে দিন দিন বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ার পেছনে পর্যটকদের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য প্রতিবছর হাজারো পর্যটক আমাদের এ দ্বীপে আসেন। আমাদের অর্থনীতি ও সমাজের জন্য এ পর্যটন আশীর্বাদস্বরূপ। কিন্তু এ পর্যটনের কারণে আমাদের প্রধান যে সমস্যা হয়, তা হলো সমুদ্রসৈকতে নানা ধরনের বর্জ্য ও সামুদ্রিক বর্জ্য জমা হয়ে থাকে।’

পরিচ্ছন্ন পৃথিবী গড়ে তোলার লক্ষ্যে কোকাকোলার বৈশ্বিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১০ বছর ধরে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

২০১১ সাল থেকে কোকাকোলা বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কোস্টাল ক্লিনআপ উদ্যোগে সহায়তা করে আসছে। গত ১০ বছরে ৪ হাজার ৫০০-এর বেশিসংখ্যক মানুষ একত্র হয়ে ১২ হাজার কেজির বেশি সামুদ্রিক বর্জ্য সংগ্রহ করেছেন। এ পার্টনারশিপের মাধ্যমে সারা বিশ্বের সমুদ্রগুলোকে দূষণমুক্ত করতে কাজ করছে কোকাকোলা।


https://www.prothomalo.com/


 

সেন্ট মার্টিন: চার ঘণ্টায় সাফ ১৫০০ কেজি বর্জ্য


সৈকত পরিচ্ছন্নতার এক কার্যক্রমে অংশ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবীরা চার ঘণ্টায় সেন্ট মার্টিনের একটি অংশ থেকে প্রায় দেড় হাজার কেজি ময়লা ও আবর্জনা পরিষ্কার করেছে, যেগুলোর বেশির ভাগই পচনশীল নয়।

বছরজুড়ে বিপুল পরিমাণ জমা হওয়া বর্জ্য দেশের একমাত্র এ প্রবাল দ্বীপ থেকে মূল ভূখণ্ডে ফিরিয়ে নিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানও এসেছে এ অভিযান থেকে।

ছোট্ট আয়তনের এ দ্বীপের অস্তিত্ব রক্ষায় পর্যটক চাপের লাগাম টেনে ধরার তাগিদের কথাও এসেছে।

শুক্রবার বছরের শেষ দিন সেন্ট মার্টিনে ‘পিক ইট আপ, ক্লিন ইট আপ, সি চেঞ্জ’ স্লোগানে এ কার্যক্রমের আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ এর বাংলাদেশ অংশ।

এবারের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভিযানে প্রায় এক হাজার ৪৫০ কেজি প্লাস্টিক এবং অপচনশীল আবর্জনা সাফ করা হয়েছে।

আয়োজকরা জানান, প্রতি বছরই বাড়ছে এসব বর্জ্যের পরিমাণ, যা দেশের একমাত্র এ প্রবাল দ্বীপের পরিবেশের জন্য মারাত্বক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

প্লাস্টিক দ্রব্যের এ ক্রমবর্র্ধমান আগ্রাসনের জন্য দ্বীপে আসা বিপুল পর্যটকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণকে দায়ী করেন আয়োজক সংগঠন ওশান কনজারভেন্সি বাংলাদেশ অংশের সমন্বয়ক মুনতাসির মামুন।

বার্ষিক এ সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবী। এর মাঝে ঢাকা থেকে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ৭৩ জন স্বেচ্ছাসেবী।

ছুটির দিনেও সেন্ট মার্টিনে এ অভিযানে অংশ নেয় বিএন ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী।

এছাড়া পুরো আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ছিলেন কক্সবাজার থেকে আসা কয়েকজন সার্ফার ও লাইফ গার্ড সদস্য।

সকাল ৯টা দুপুর ১টা পর্যন্ত সেন্ট মার্টিন জেটি ঘাটের কাছাকাছি সৈকতের বিভিন্ন অংশে পড়ে থাকা প্লাস্টিক এবং অপচনশীল দ্রব্য অপসারণ করে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় জড়ো করা হয়।

এরপর এসব আবর্জনা ধরন অনুযায়ী ভাগ করা হয়। গবেষণার জন্য এসব তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে ধারাবাহিক এ আয়োজনের শুরু থেকে।

ওশান কনজারভেন্সির তথ্য অনুসারে, শুধু এক দিন সেন্ট মার্টিনের ক্ষুদ্র অংশে পরিচালিত পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ২০১১ সালে পরিষ্কার করা হয় ৪৮০ কেজি অপচনশীল দ্রব্য; যা প্রতিবছরই বেড়ে ২০১৬ সালে হাজার কেজি ছাড়ায়। ২০২০ সালে এর পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ১৪০ কেজি।

  সেন্ট মার্টিন থেকে ১৩শ কেজি আবর্জনা ধ্বংস

মুনতাসির মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতি বছরই দেখছি সেন্ট মার্টিনে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ গাণিতিক হারে পর্যটন বেড়েছে শেষ কয়েক বছরে।

“এক সময় এখানে একটা জাহাজ আসত। এখন আসে নয়টা। একটা জাহাজে কম করে হলেও যদি পাঁচশ জন করে আসেন, তাহলেও এখন সাড়ে চার হাজার মানুষ আসেন।“

এসব বর্জ্য মূল ভূখণ্ডে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যদি পর্যটক ও স্থানীয়দের ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও অপচনশীল দ্রব্য সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মূল ভূখন্ডে ফিরিয়ে নেওয়া যায়, তাহলেই শুধু দূষণের হাত থেকে সেন্ট মার্টিনকে বাঁচানো সম্ভব।“

পর্যটকদের অসচেতনতা থেকেও বর্জ্য বাড়ছে এমন কথাও বলছেন এ অভিযানে অংশগ্রহণকারীরা।

তারা বলেন, এ ছোট জায়গার মনুষ্য সৃষ্ট আবর্জনা ধারণ করার ক্ষমতা আসলেই নেই।

প্রবাল দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকদের এ নিয়ে সচেতন করার কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। তারাও পর্যটকদের আচরণ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাওয়ার কথা জানালেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সেন্টমার্টিন সাবজোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, “পর্যটকবাহী জাহাজ জেটিতে ভেড়ার পরপরই হ্যান্ডমাইকে পরিবেশ সচেতনতামূলক বার্তা দেই।

“এছাড়া সৈকতের ব্যবসায়ী, হোটেল মালিকদের প্রতি নির্দেশনা আছে যাতে প্লাস্টিক দ্রব্য সৈকতে ফেলা না হয়। এরপরও পরিস্থিতির খুব উন্নতি হয়েছে বলা যাবে না।”

এ পরিস্থিতিতে অসচেতন পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের উপর ‘আইন প্রয়োগ’ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানালেন তিনি।


www.bdnews24.com

রিয়াসাদ সানভীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2021, 07:57 PM
Updated : 31 Dec 2021, 07:59 PM

Video:
https://www.facebook.com/DailyProthomAlo/videos/2381223658675250/

Leave a Reply